.jpeg&w=3840&q=75)
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর একটি হাসপাতালে হাতের অপারেশন করাতে গিয়ে রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে মৃতের মেজো ছেলে মো. রাজন হোসেন এমন অভিযোগ করেন। এর আগে শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রাইম হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে ওই নারী মারা যান। মৃত রাবেয়া লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের সর্দার বাড়ির শামছুল হুদার স্ত্রী। নিহতের ছেলে রাজন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দুই মাস আগে বাড়ির উঠানে পা পিছলে পড়ে বাম হাতের কবজির ওপরে ভেঙে ফেলেন মা। তাৎক্ষণিক চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের এক ডাক্তারের কাছে ভাঙা হাতে প্লাস্টার করা হয়। দুই মাস পর প্লাস্টার খুলে এক্সরে করলে দেখা যায় ভাঙা হাড় জোড়া লাগেনি। এরপর মাইজদীর প্রাইম হসপিটালের ডাক্তার ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে ৭৫ হাজার টাকায় মায়ের বাম হাতের ভাঙা স্থানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাত বসানোর চুক্তি হয়। তিনি জানান, চুক্তি মোতাবেক শনিবার সন্ধ্যায় মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অজ্ঞান করেন অ্যানেসথেসিয়ান গোলাম হায়দার। পরে তার আর জ্ঞান ফেরেনি। রাজন অভিযোগ আরও বলেন, অজ্ঞান করার এক ঘণ্টা পর তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ব্যাপক টালবাহানা করে রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান আমার মা মারা গেছেন। প্রকৃতপক্ষে আমার মা অজ্ঞান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। রোববার সকালে হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয় অপারেশন, আইসিইউ ও অ্যাম্বুলেন্সের কোনো খরচ লাগবে না আপনারা মরদেহ নিয়ে যান। হাসপাতাল থেকে আমাকে বলা হয়েছে- আমার মায়ের হাইপ্রেশার থাকায় এমন হয়েছে। আবার বলে লো প্রেশার ছিল, এজন্য এমন হয়েছে। রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে আমার বড় ভাই ও চাচা হাসপাতালে এসে সমঝোতা করে মরদেহ নিয়ে গেছেন। কী সমঝোতা হয়েছে সেটা আমি এখনো জানি না। যোগাযোগ করা হলে মাইজদী প্রাইম হসপিটালের সিনিয়র এজিএম শিপন শাহ ভুল চিকিৎসার মৃত্যু অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, অপারেশনের পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ডাক্তার রোগীর স্বজনদের বলেছেন আপনারা মামলা করার প্রয়োজন মনে করলে করেন। নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডাক্তার মরিয়ম সিমি বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৭ নভেম্বর, ২০২৫
কলা হলো সবচেয়ে পুষ্টিকর এবং সাশ্রয়ী মূল্যের ফলের মধ্যে একটি। সকালের নাস্তায় অনেকে কলা খেয়ে থাকেন। খালি পেটে কলা খাওয়া কি উপকারী নাকি ক্ষতিকর? এটি কেবল আপনার পেট ভরিয়ে তুলবে না, সেইসঙ্গে করবে আরও কিছু কাজও। কলা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে এবং আরও অনেক উপকার নিয়ে আসে। ১. দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করে কলা খাদ্যতালিকায় নিয়মিত থাকা উচিত কারণ এর অনেক সুবিধা রয়েছে। কলা পটাসিয়াম, ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়ামের একটি চমৎকার উৎস, যা শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। এটি স্ট্যামিনা বাড়ায় এবং ক্ষুধার যন্ত্রণা কমায়। কলায় তিনটি প্রাকৃতিক শর্করা থাকে- গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ, যা শক্তি স্থিতিশীল এবং টেকসই করে। সকালে প্রথমেই একটি কলা খেলে বিপাক প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং প্রক্রিয়াজাত নাস্তার মতো শরীরের কোনো ক্ষতি করে না। ২. অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ডাক্তার এবং পুষ্টিবিদরা সকালের ফল হিসেবে কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন, তার একটি কারণ রয়েছে। এটি দ্রবণীয় ফাইবার, বিশেষ করে পেকটিন সমৃদ্ধ, যা মসৃণ হজম এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে। খালি পেটে কলা খেলে তা অম্লতা প্রশমিত করতে এবং পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে মসৃণ মলত্যাগেও সহায়তা করে। ২০২০ সালের একটি গবেষণাপত্রও নিশ্চিত করেছে যে, কলা একটি প্রাকৃতিক প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে এবং মাইক্রোবায়োমকে শক্তিশালী করে। এটি পুষ্টি শোষণ এবং সামগ্রিক অন্ত্রের স্বাস্থ্যে সহায়তা করে। ৩. রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি হওয়া সত্ত্বেও কলার মাঝারি গ্লাইসেমিক সূচক প্রায় ৪৮। এর অর্থ হলো এটি ধীরে ধীরে চিনি ছেড়ে দেয়, যা হঠাৎ করে বৃদ্ধি না করে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে। এক মুঠো বাদাম বা বীজের সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য আরও বজায় রাখা যায়। ফাইবারের পরিমাণ চিনির শোষণকে ধীর করে দেয়, যা শরীরকে চর্বি হিসেবে সংরক্ষণ করার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক শর্করা ব্যবহার করতে দেয়।
২৩ অক্টোবর, ২০২৫
হৃদরোগ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল এবং এখনও আছে, তবে একমাত্র সুসংবাদ হলো এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। করোনারি হৃদরোগ তখন ঘটে যখন হৃদপিণ্ডে রক্ত বহনকারী ধমনীগুলো সংকুচিত বা অবরুদ্ধ হয়ে যায়, সাধারণত ধমনীতে প্লাক বা ফ্যাট জমার কারণে এমনটা হয়। সংজ্ঞা অনুসারে এই প্রক্রিয়াটিকে এথেরোস্ক্লেরোসিস বলা হয়। যা ধীরে ধীরে হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে, যার ফলে ধীরে ধীরে বুকে ব্যথা, হার্ট অ্যাটাক এমনকি হার্ট ফেইলিওরও হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ উচ্চ রক্তচাপ হৃদপিণ্ড এবং ধমনীর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।এর ফলে ধমনীর দেয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চর্বি জমা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নিয়মিত ফলো-আপ, ব্যায়াম এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তচাপের মাত্রা বজায় রেখে হৃদপিণ্ডকে সুরক্ষিত রাখার এটি সবচেয়ে কার্যকর উপায়। PubMed central-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে, উচ্চ রক্তচাপ দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা না করা হলে তা হৃদরোগের কারণ হতে পারে। উচ্চ কোলেস্টেরল সকল কোলেস্টেরলের রিডিং একই রকম হয় না! অত্যধিক LDL বা খারাপ কোলেস্টেরল যাকে বলা হয়, ধমনীতে লেগে থাকে এবং প্লাক তৈরি করে যা ধমনীকে শক্ত করে তোলে। আপনার খাদ্যতালিকায় ফল, শাক-সবজি এবং গোটা শস্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের খারাপ চর্বি কমে যায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, মোট কোলেস্টেরল বৃদ্ধি CHD-এর জন্য একটি শক্তিশালী ঝুঁকির কারণ। ডায়াবেটিস রক্তে শর্করার মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে তা রক্তনালী এবং স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা হৃদপিণ্ডকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রয়োজনে খাদ্য, ব্যায়াম এবং ওষুধের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে যায়। গবেষণায় বলা হয়েছে যে, করোনারি আর্টারি ডিজিজ (CAD) ডায়াবেটিস মেলিটাস (DM) রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসের একটি প্রধান নির্ধারক। ধূমপান ধূমপান ধীরে ধীরে ধমনীর অভ্যন্তরীণ আস্তরণের ক্ষতি করে এবং শরীরে রক্ত প্রবাহ এবং অক্সিজেন হ্রাস করে যার ফলে হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ বৃদ্ধি পায়। জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে যে, ধূমপান করোনারি ধমনী রোগের (CAD) ঝুঁকির কারণ। স্থূলতা শরীরের মাঝখানে (পেটের অংশে) অতিরিক্ত ওজন বহন করলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তের কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সঠিক ব্যায়াম এবং খাদ্য সচেতনতার সাহায্যে যত্ন সহকারে ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদযন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় সহজতর করতে পারে। শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাও স্থূলতা এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো ঝুঁকির কারণ। দিনে মাত্র ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা আপনার হৃদযন্ত্রকে শক্ত করে তুলবে এবং রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করবে। তাই অলস শুয়ে-বসে না থেকে শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কাজ করুন।
২২ অক্টোবর, ২০২৫