.jpeg&w=3840&q=75)
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর একটি হাসপাতালে হাতের অপারেশন করাতে গিয়ে রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে মৃতের মেজো ছেলে মো. রাজন হোসেন এমন অভিযোগ করেন। এর আগে শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রাইম হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে ওই নারী মারা যান। মৃত রাবেয়া লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের সর্দার বাড়ির শামছুল হুদার স্ত্রী। নিহতের ছেলে রাজন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দুই মাস আগে বাড়ির উঠানে পা পিছলে পড়ে বাম হাতের কবজির ওপরে ভেঙে ফেলেন মা। তাৎক্ষণিক চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের এক ডাক্তারের কাছে ভাঙা হাতে প্লাস্টার করা হয়। দুই মাস পর প্লাস্টার খুলে এক্সরে করলে দেখা যায় ভাঙা হাড় জোড়া লাগেনি। এরপর মাইজদীর প্রাইম হসপিটালের ডাক্তার ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে ৭৫ হাজার টাকায় মায়ের বাম হাতের ভাঙা স্থানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাত বসানোর চুক্তি হয়। তিনি জানান, চুক্তি মোতাবেক শনিবার সন্ধ্যায় মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অজ্ঞান করেন অ্যানেসথেসিয়ান গোলাম হায়দার। পরে তার আর জ্ঞান ফেরেনি। রাজন অভিযোগ আরও বলেন, অজ্ঞান করার এক ঘণ্টা পর তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ব্যাপক টালবাহানা করে রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান আমার মা মারা গেছেন। প্রকৃতপক্ষে আমার মা অজ্ঞান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। রোববার সকালে হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয় অপারেশন, আইসিইউ ও অ্যাম্বুলেন্সের কোনো খরচ লাগবে না আপনারা মরদেহ নিয়ে যান। হাসপাতাল থেকে আমাকে বলা হয়েছে- আমার মায়ের হাইপ্রেশার থাকায় এমন হয়েছে। আবার বলে লো প্রেশার ছিল, এজন্য এমন হয়েছে। রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে আমার বড় ভাই ও চাচা হাসপাতালে এসে সমঝোতা করে মরদেহ নিয়ে গেছেন। কী সমঝোতা হয়েছে সেটা আমি এখনো জানি না। যোগাযোগ করা হলে মাইজদী প্রাইম হসপিটালের সিনিয়র এজিএম শিপন শাহ ভুল চিকিৎসার মৃত্যু অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, অপারেশনের পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ডাক্তার রোগীর স্বজনদের বলেছেন আপনারা মামলা করার প্রয়োজন মনে করলে করেন। নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডাক্তার মরিয়ম সিমি বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগে গণভোট পরে জাতীয় নির্বাচন, না হয় নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম। (শুক্রবার) সকালে নোয়াখালীর পৌরবাজারে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এটিএম মাসুম বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী দিনে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অঙ্গীকারে এ দেশের জনগণ আবদ্ধ হয়। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা এই সনদকে আদর্শের মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে গণভোটের মাধ্যমে এটাকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, এই দাবিতে আমরা যখন আন্দোলন শুরু করেছিলাম তখন একটি দল বলছিল, এগুলো তো আলোচনার পথে থাকার কথা, জামায়াত এগুলোকে নিয়ে রাজপথে কেন যাচ্ছে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর আপনারা কি বুঝতে পেরেছেন আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা কী। আমরা আগেই সন্দেহ করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টার আশপাশে এমন কিছু কুচক্রী মহল আছে যারা এই দেশকে অতীতেও সঠিক পথে চলতে দেয়নি, আর ভবিষ্যতেও এই দেশকে সঠিক পথে চলতে দেবে না। তিনি বলেন, আমরা এই চক্রান্ত আঁচ করতে পেরে ৫ দফা দাবীর ভিত্তিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করি। এই আশঙ্কার জেরে আমাদের সাথে আরও কয়েকটি ইসলামি দল রাজপথের আন্দোলনে শামিল হয়। আমাদের ৫ দফা দাবি ছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা ও সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়া, গণভোটের মধ্যে দিয়ে এই সনদকে এই জাতির জন্য স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এটাকে একটি মহাসনদ হিসেবে মর্যাদা দান করা, আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, বিগত স্বৈরশাসকের বিচার নিশ্চিত করা, নতুন কোনো স্বৈরশাসক যাতে তৈরি না হতে পারে সেজন্য নির্বাচন পরিষদকে স্বাধীনসত্ত্বা দান করা। এটা শুধু আমাদের দাবি নয়, দেশের ৭০ ভাগ জনগণ এই দাবির পক্ষে। সমাবেশ শেষে পৌর বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নাশকতা ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্নের দাবিতে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে জেলা শহরের বড় মসজিদ মোড় থেকে শহর শাখা শিবিরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। এতে সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বড় মসজিদ মোড়ে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ-সমাবেশে স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পুরো এলাকা সরব হয়ে ওঠে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতের মতো আবারও দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। গণহত্যার বিচারে ধীরগতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতার সুযোগে দলটি ফের নাশকতার পথে হাঁটছে। তারা জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ সব হত্যার দ্রুত বিচার সম্পন্নের দাবি জানান। বক্তারা আরও বলেন, জুলাই সনদকে আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আওয়ামী লীগের অতীত ও চলমান গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করে দলটিকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর রাজধানীর পুরানা পল্টনে আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠা হামলার বিচারের দাবিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর)বিকালে বাদ আসর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি সূচনা হয়ে বসুরহাট বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো পদক্ষীণ করে বাজারের কেন্দ্রস্থলে আরডি শপিং মলের সম্মুখে সমাবেশ মিলিত হয়। এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে দেশের সকল মহানগরী, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, তারই অংশ হিসেবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে আয়োজন করেছে। বিক্ষোভ মিছিল পরিচালনা ও সমাবেশ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জামায়াতের পৌরসভার সেক্রেটারি মাওলানা হেলাল উদ্দিন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা জামায়াতের আমির ও নোয়াখালী- ৫ আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বসুরহাট পৌরসভার জামায়াতের আমির ও বসুরহাট পৌরসভার জামায়াতের মেয়র প্রার্থী মাওলানা মোশারফ হোসাইন। বক্তৃতারা বলেন, ২৮শে অক্টোবর জাতির ইতিহাসে এক ভয়াল দিন। ওই দিন আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের হামলায় ঢাকাসহ সারা দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৪ জন নেতাকর্মী শহীদ হন এবং আহত হন সহস্রাধিক নেতাকর্মী। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করে মৃতদেহের ওপর নৃত্য করে বর্বর আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে- যা সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। এই ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত মানবতাবিরোধী গণহত্যা। আরো বলেন,আগামীতে জাতি জামায়াত ইসলামীকে দাঁড়িপাল্লা ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে, জাতি সন্ত্রাসী,লুটেরা, চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।জনগণ শান্তি চায় ,নিরাপত্তা চায় এবং মাথা উঁচু করে চলতে চায়। এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মহি উদ্দিন,পৌর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ইয়াকুব, পৌর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবু ইউসুফসহ উপজেলা ও পৌরসভা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরব থেকে ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রী, মা ও ভাতিজাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসছিলেন আবুল কালাম আজাদ (৫৫)। তবে বাড়ি ফেরা হলো না তার। পথে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় নিহত হন আজাদ। এছাড়া আহত হয়েছেন তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমন। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোররাতে মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কালাম আজাদ নোয়াখালীর সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ও সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরদরবেশ গ্রামের নুরুল হক ছোট মিয়ার ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ওমরা হজ পালন শেষে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রী, মা ও ভাতিজাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন আজাদ। মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। নিহতের ছেলে মো. ফাহাদ হাসান বলেন, আমাদের বাড়ি পৌঁছাতে মাত্র ২০ মিনিট বাকি ছিল। হঠাৎ এক দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির পেছনে ধাক্কা দিয়ে চালক পালিয়ে যায়। রাত হওয়ায় কেউ দুর্ঘটনাটি টের পায়নি। চারপাশ আলোকিত হওয়ার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। তিনি আরও বলেন, আহতদের নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। বাবা ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পুলিশের সহযোগিতায় প্রথমেই আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেয়াজপুরে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজারের মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার মসজিদে শিবিরের আয়োজিত কুরআন শিক্ষার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শুরু হয়। রোববার আসরের নামাজের পর একই স্থানে কর্মসূচি হলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা আহত হন। নোয়াখালী জেলা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মসজিদে হামলা চালায় এবং কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে সংগঠনের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় একাধিক বিএনপির নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, মসজিদে শিবির নেতাকর্মীরা দলীয় স্লোগান দিলে বাধা দেওয়ায় তারা হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন বিএনপির অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। কয়েকজনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার (সিইপিজেড) একটি ভবনে চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির একটি কোম্পানির দুইটি তলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট কাজ করছে। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কোনো কিছু জানা যায়নি। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কোম্পানিতে আগুন লাগে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৮ তলা ভবনের মেডিকেল ইকুইপমেন্ট তৈরির প্রতিষ্ঠানের ৭ তলায় আগুন লাগার পর ৬ তলায় ছড়িয়ে পড়ে। সিইপিজেড, বন্দর, কেইপিজেড ও আগ্রাবাদের ১৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রচুর পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বহুতল কারখানার ওপরের তলায় আগুন জ্বলছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। কারখানাটিতে কত শ্রমিক ছিলেন, কেউ আটকা পড়েছেন কিনা, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপসহকারী পরিচালক আবদুল মান্নান বলেন, ওই কারখানায় কোনো শ্রমিক কর্মচারী আটকা পড়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া বলেন, সিইপিজেডে একটি ভবনে চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির একটি কোম্পানির দুইটি তলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই তলায় গুদাম বলে ধারণা করছি। আগুন লাগার খবরে সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নারীদের নামতে দেখা গেছে। গুরুতর তেমন আহত হয়নি। এখনও সেখানে আগুন জ্বলছে।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নবগঠিত ছাত্রী সংস্থার আত্মপ্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক প্রশাসনিক কর্মকর্তার অশালীন মন্তব্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ১৫ অক্টোবর বুধবার নবীন নারী শিক্ষার্থীদের বরণের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুর রহমান পোস্টের কমেন্টে 'আর নয় গুপ্ত ও পরকীয়া। এবার স্বামী হিসেবে স্বীকৃতি' মন্তব্য করেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, ফেসবুকে নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও বিএনপি নেতার এমন অশালীন, নারী-বিদ্বেষী ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা সেই কর্মকর্তার বিচার দাবি করছি। ইসরাত জাহান নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ শুধু অনৈতিক নয়, এটি শিক্ষাঙ্গনের মূল্যবোধ ও পেশাগত নীতির চরম লঙ্ঘন। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ভবিষ্যতে যেন কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নারী-বিদ্বেষী বা অবমাননাকর আচরণে লিপ্ত না হন, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর ত্যাগ শিকার করেছি। আমার নামে ১৭টি মামলা আছে। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি একটা মন্তব্য করেছি এটা আমার ভুল হয়েছে। তবে এতদিন তারা কোথায় ছিল? কখনো তো তাদের কাউকে দেখি নাই। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে কিন্তু তিনি কারও কথা শুনেন না। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রায় সবার নামেই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন। একটা মানুষ ব্যক্তিগত না পরিবর্তন হলে আমরা কিছুই করতে পারি না। তাকে বিষয় গুলো অবহিত করা হলেও তিনি গুরুত্ব দেন না।

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মো. জসিমকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী। রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জসিম সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগীর স্বামী জেলা শহরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং সপ্তাহে একদিন বাড়িতে যান। এ সময় গৃহবধূ পালিত কন্যাসন্তানকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে গৃহবধূর ঘরে সিঁধ কেটে প্রবেশ করে অভিযুক্ত জসিম ও তার সহযোগী। পরে জসিম গৃহবধূর মুখ চেপে ধরলে তিনি জসিমকে চিনে ফেলেন। পরবর্তীতে গৃহবধূর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, গৃহবধূর স্বামী অনুপস্থিত থাকার সুযোগে প্রতিবেশী জসিম দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীকে নানা অঙ্গভঙ্গি ও কটূক্তির মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করতেন। গৃহবধূর মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামি জসিম পলাতক ছিলেন। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাকে সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের ৬ষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখা। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে নোয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলেজ শিবির সভাপতি নাজিম মাহমুদ শুভ এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি আব্দুল কাদের আল আমিন। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মাহবুব। এছাড়া শহর ও কলেজ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর একমাত্র অপরাধ ছিল সত্যের পক্ষে কথা বলা এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। তাঁরা দিনটিকে ‘নিপীড়নবিরোধী দিবস’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানান। বক্তারা আরও বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির নামে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাস্তবতায় ছাত্রসমাজ এমন সহিংসতার পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চায় না। আলোচনা সভা শেষে শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।

সদর উপজেলা প্রতিনিধিঃ নোয়াখালী সদর উপজেলায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মো.সাঈদ (২৯) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরমটুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাঈদ একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে এবং পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্বচরমটুয়া গ্রামে হালকা বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় থেমে থেমে বজ্রপাতও হয়। ওই সময় বৃষ্টিতে বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে মাছ ধরতে যান। একপর্যায়ে সেখানে বজ্রপাতে তিনি মারা যান। পরে সকালে স্থানীয়রা তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর সুধারাম থানার সংলগ্ন হাউজিং এলাকায় প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ঙ্কর দৌরাত্ম্যের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংঘটিত এ হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, একদল কিশোর রিকশা থামিয়ে আরেক কিশোরের ওপর হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় তারা তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। বাবা-মা বলে ডেকেও ছেলেটা রক্ষা পায়নি। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২ মিনিট ২১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, প্রায় ৯ জন কিশোর রিকশায় থাকা এক কিশোরকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারছে। একপর্যায়ে ওই তরুণ দৌড়ে প্রাণে রক্ষা পান, তবে গ্যাং সদস্যরা তাকে ধাওয়া করতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা আফসার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এসব কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। হয়তো একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বলে মানুষ জানতে পেরেছে কিন্তু বাস্তবে এর সং খ্যা অনেক বেশি। দিন কি রাত কিশোর গ্যাং উৎপাত চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ খুলছে না কেউ। আমাদের দাবি, দ্রুত এ ধরনের অপরাধ দমনে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা ভিডিওটি পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হামলাকারীদের পরিচয় পাওয়া গেছে তবে ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তারা সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।