
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কানকাটা কাদিরাকে হত্যার ঘটনায় সাত দিন পর এক সৌদি প্রবাসীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন, উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের আব্দুল কাদের চেরাং বাড়ির বাসিন্দা সৌদি আরব প্রবাসী মো. ইদ্রিস ওরফে মানিক (৩৪), মোহাম্মদ রাকিব (২৬) ও একই বাড়ির মো. জাফর (২৮)। শনিবার বিকেলে আসামিদের নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। এর আগে, একই দিন ভোরে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চেরাং বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জিলানী ওই উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. গোফরানের ছেলে। পুলিশ জানায়, এক মাস আগে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চেরাং বাড়ির সৌদি আরব প্রবাসী মানিক দেশে ফেরেন। দেশে আসার পর তার থেকে ইয়াবা সেবনের জন্য টাকা দাবি করেন চার মামলার আসামি কানকাটা কাদিরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একটা বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই সুযোগে কাদিরার প্রতিপক্ষ গ্রুপের রাকিব ও জাফরসহ একাধিক অস্ত্রধারী কাদিরাকে হত্যার মিশনে নামেন। পরবর্তীতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী উপজেলার হাজীপুর গ্রামের মুন্নার দোকানের সামনে তাকে পিটিয়ে এবং উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার পর মরদেহ ডোবায় ফেলে দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক কুতুব উদ্দিন লিয়ন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের পরিবার বেগমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের সাত দিন পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিন আসামির মধ্যে দুজন দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাঁশের সাঁকো থেকে খালে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফাতেহা আক্তার (৫) একই ইউনিয়নের আহাম্মদ আলীর নতুন বাড়ির কফিল উদ্দিন বাবুর মেয়ে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে নিহত শিশুর মা শারমিন আক্তার নামাজ পড়ার জন্য ঘরে যায়। ওই সময় শিশুটি পরিবারের সদস্যদের অগোচরে বাড়ির পাশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় পা পিছলে খালের পানিতে পড়ে যায়। নিহতের মা নামাজ শেষে ঘর থেকে বের হয়ে লোকজনের চিৎকার শুনে খালের সামনে যায়। সেখানে গিয়ে তিনি মেয়ের লাশ খালের পানিতে ভাসতে দেখেন। বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ না থানায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক যুবককে বেধড়ক পেটানোর পর কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিক পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম জানাতে পারেনি। নিহত যুবকের নাম আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কানকাটা কাদিরা (৪২)। তিনি চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোফরান মিয়া বাড়ির মো. গোফরানের ছেলে। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরের দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চারেং বাড়ির দরজায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত কাদের ৭/৮ মাস আগে বিয়ে করেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে কাদেরের বিরোধ দেখা দেয়। এ ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে উপজেলার চারেং বাড়ির দরজায় কে বা কারা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ও মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ সেখানে রেখে পালিয়ে যায়। কাদেরের বিরুদ্ধে মারামারি, মাদকসহ ৪টি মামলা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জেরে কাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান নিহত যুবকের শ্বশুরের বরাত দিয়ে বলেন, ওই যুবক অপরাধ জগতে জড়িত থাকায় পরিবারের সঙ্গে তেমন সম্পর্ক ছিল না। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। লিখিত অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৪ মামলার আসামি মো. জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কসাই জাহাঙ্গীর (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১), সিপিসি-৩। রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার মিরওয়ারীশপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে রিয়াজ স্টোরের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর আলম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পৌর ১ নং ওয়ার্ডের উত্তর নাজিরপুর এলাকার মৃত নুরুজ্জামান ওরফে কালা মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় মাদক, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ মোট ১৪টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর আলম মাদক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করে র্যাবের একটি চৌকস দল অভিযান পরিচালনা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর নিজেকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে স্বীকার করেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, কসাই জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা রয়েছে। তাকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রাইভেটকারে করে গাঁজা বিক্রি করতে আসা একাধিক মামলার আসামি মাদক কারবারি সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) গভীর রাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা সাদ্দাম হোসেন ফেনী জেলার ফেনী পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের উত্তর সাড়িপুর এলাকার মৃত আবদুল সোবহানের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত বলে র্যাব জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফেনী ও নোয়াখালীতে একাধিক মামলা রয়েছে। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি টহল দল জানতে পারে—একজন মাদক কারবারি বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে ফেনী থেকে নোয়াখালীর দিকে আসছে খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়। পরে রাত আনুমানিক ১টা ৫০ মিনিটের দিকে সন্দেহভাজন গাড়িটিকে থামার সংকেত দিলে সেটি দ্রুতগতিতে পালানোর চেষ্টা করে। র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে আলীপুর খালপাড় এলাকায় গাড়িটিকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় গাড়ি তল্লাশি করে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। গাঁজাগুলো দুটি প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় প্রাইভেটকারের ভেতর লুকানো ছিল। একই সঙ্গে মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পুরাতন মডেলের সিলভার রঙের টয়োটা প্রিমিও গাড়িও জব্দ করা হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্ধার করা গাঁজা ও জব্দ করা প্রাইভেটকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সমাজ থেকে মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত র্যাবের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জেলা গোয়েন্দা শাখা, নোয়াখালী কর্তৃক বেগমগঞ্জ মডেল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করিয়া ৯৪ (চুরানব্বই) বোতল বিদেশী মদসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার। গ্রেফতারকৃত আসামীর নামঃ- ১। মোঃ ইয়াছিন আরাফাত(২২), পিতা-মৃত জসিম উদ্দিন, মাতা-শাহিনুর আক্তার রেখা, সাং-পৌর হাজীপুর (মহাজন বাড়ী) ০৯নং পৌর ওয়ার্ড, চৌমুহনী পৌরসভা, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী। জেলা গোয়েন্দা শাখা, নোয়াখালীর সদস্যগণ অদ্য ২২/১০/২০২৫ইং তারিখ ১৩.৩০ ঘটিকার সময় গোপন সূত্রে জানিতে পারেন যে, বেগমগঞ্জ মডেল থানাধীন চৌমুহনী পৌরসভার ০৯ নং ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর সাকিনস্থ মহাজন বাড়িতে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদক বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করিতেছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। অতঃপর মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আব্দুল্লাহ্-আল-ফারুক, নোয়াখালী মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায়, জনাব মোহাম্মদ ইব্রাহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্), নোয়াখালীর তত্ত্বাবধানে ও জনাব মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, নোয়াখালী এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ) মোঃ জাকির হোসেন সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সের সহায়তায় বর্ণিত ঘটনাস্থলে পৌঁছাইয়া আসামী মোঃ ইয়াছিন আরাফাত(২২) কে ধৃত করেন ও তাহার হেফাজত থেকে ০৫(পাঁচ) বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করেন। ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পাইয়া ঘটনাস্থল থেকে আসামী মোঃ আরমান হোসেন(২৫) তাহার বসতঘরের পিছনের দরজা দিয়া পালাইয়া যায়। ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে তাহার বসতঘর সংলগ্ন ডোবাতে আরো মদের বোতল রক্ষিত আছে মর্মে স্বীকার করে। তখন ধৃত আসামীর দেখানো ও ডোবাতে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত অবস্থা থেকে বাহির করিয়া দেওয়া মতে আরো ৮৯(ঊননব্বই) বোতল বিদেশী মদ উদ্ধারসহ সর্বমোট ৯৪(চুরানব্বই) বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশী মদ জব্দতালিকা মূলে জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীদ্বয় পেশাদার মাদক কারবারি। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আলোচিত কিশোর মারওয়ান হোসেন বিজয় হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি দেলোয়ার বাহিনী’র সদস্য শুভকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে । সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে বেগমগঞ্জ থানার জামিদারহাট এলাকায় ইসলামী ব্যাংকের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শুভ বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের রাজা মিয়ার বাড়ির রাজা মিয়ার ছেলে। র্যাব জানায়, গত ৩ অক্টোবর রাতে বেগমগঞ্জের একলাশপুর এলাকায় দেলোয়ার বাহিনীর সক্রিয় সদস্যরা মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর বিজয়ের পথরোধ করে। এ সময় রামদা, ছোরা, কিরিচ, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উপর্যুপরি তিন শতাধিক কোপ মারা হয়। গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বিজয়। হামলাকারীরা এ সময় এক সাক্ষীকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বিজয়কে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বোন শাহানাজ আক্তার সুবর্ণা বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর একাধিক সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিল। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় শুভকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এর আগে একই বাহিনীর সদস্য এজাহারনামীয় আসামি সৈকতকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শুভ তার নাম-পরিচয় ও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, শুভ হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। তাকে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের এ ধরনের অভিযান চলবে।

কখনো হাঁকডাক, কখনো নীরবতা। কেউ মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছেন ছিপ-বড়শির দিকে, কেউবা মাছ পেতেই উল্লাসে ফেটে পড়ছেন। এমন উৎসবমুখর পরিবেশে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দিনব্যাপী নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শতবর্ষী শিলামনীর দিঘিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শখের মাছ শিকারিদের মিলনমেলা। দিনভর চলে ছিপ ফেলা, টানাটানি আর উল্লাসের মুহূর্ত। কারও বড় মাছ ধরা পড়ে, কেউবা অপেক্ষায় কাটিয়ে দেন পুরো দিন। কেউ কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেয়ে কিছুটা হতাশ হলেও, উৎসবের আনন্দে তাতে ভাটা পড়েনি। জানা গেছে, এ আয়োজনে অংশ নিতে প্রতিজনকে দিতে হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা করে টিকিট মূল্য। এবারের উৎসবে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোট ৫৫ জন সৌখিন মাছ শিকারি অংশগ্রহণ করেন। মাছ ধরার আসন নির্ধারণ করা হয় লটারির মাধ্যমে। স্থানীয় বাসিন্দা মো. মজিবুর রহমান বলেন, শতবর্ষী এই দিঘিকে ঘিরে এখন উৎসবের আমেজ। মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষও দিনভর ভিড় জমায় দিঘিপাড়া। মাছ শিকার উৎসবকে ঘিরে এখানে মেলার মেলার মতো হচ্ছে। অনেক দোকানপাট এবং অনেক মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসছে। ভিন্ন এক উৎসব দেখেছে নোয়াখালীবাসী চট্টগ্রাম থেকে আসা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, আমি ও আমার ভাই সারাদেশের যেকোনো জায়গায় এ মাছ শিকারের খেলা হলে আমরা অংশগ্রহণ করি। এটি আমাদের নেশা ও পেশা। মাছ পাই বা না পাই, কিন্তু এই নেশা আমাদের যায় না। মাছ ধরা আমাদের কাছে অন্যরকম আনন্দের। নোয়াখালীর চৌমুহনীর পারভেজ হাসান , এই দিঘি থেকে আমি আগেও অনেকবার পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু এবার সত্যিই হতাশ হয়েছি। মাছ নেই বললেই চলে— অনেকেই খালি হাতে ফিরেছে। আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেয়ে বেশ খারাপ লেগেছে। এতে আয়োজনের সুনামও কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি আগামীবার মাছের সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবেন, তাহলে অংশগ্রহণকারীদের আগ্রহ আরও বাড়বে। মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন নামের আরেক প্রতিযোগী বলেন, অনেক মানুষের অনেক শখ থাকে। আমাদের মাছ ধরার শখ। তাই সারা বাংলাদেশে যেখানে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা হয় আমরা সেখানে যাই। মাছ ধরতে আমাদের ভালো লাগে। আসলে খারাপ কাজের থেকে ভালো কাজে থাকা অনেক ভাল। এসব খেলায় থাকলে মাদকসহ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা যায়। আয়োজক আনোয়ার পারভেজ বলেন, প্রতিবছরই শিলামনীর দিঘিতে এমন শখের মাছ ধরার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন জেলার মাছপ্রেমীরা অংশ নিয়ে একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পান। শতবর্ষী দিঘি হওয়ায় অনেক মাছ এই দিঘিতে রয়েছে। এবার ৫৫টি মাচায় খেলা চলছে। ৫৫ জন প্রতিযোগী ৩৫ হাজার টাকা করে দিয়ে টিকিট কিনেছে। প্রথম স্থান অধিকার করা সৌখিন মাছ শিকারি পেয়েছে চার লাখ টাকার প্রাইজবন্ড

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আলোচিত কিশোর মারওয়ান হোসেন বিজয় হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি শাফায়েত হোসেন সৈকতকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার (৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেগমগঞ্জ থানার বাসস্ট্যান্ড এলাকার নূর ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স দোকানের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সৈকত উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে। গত ৩ অক্টোবর রাতে বেগমগঞ্জের একলাশপুর এলাকায় দেলোয়ার বাহিনীর সক্রিয় সদস্যরা মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর বিজয়ের পথরোধ করে। এ সময় রামদা, ছোরা, কিরিচ, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উপর্যুপরি তিন শতাধিক কোপ মারা হয়। গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বিজয়। হামলাকারীরা এ সময় এক সাক্ষীকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বিজয়কে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বোন শাহানাজ আক্তার সুবর্ণা বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর একাধিক সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিল। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় ৬নং আসামি সৈকতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি যৌথ দল আসামি সৈকতকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৈকত তার নাম-পরিচয় ও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরবর্তীতে তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।