
সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপদ অভিবাসন ও অভিবাসী কর্মীদের অভিযোগ প্রতিকার শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মুকিত হাসান। তিনি নিরাপদ অভিবাসনের করণীয়-বর্জন, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের অধিকার, প্রতারণা প্রতিরোধ এবং অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সেমিনারে বক্তারা বলেন, সঠিক তথ্য ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেই বিদেশগামী কর্মীরা ঝুঁকি কমাতে পারে এবং আইনি সহায়তা ও সুরক্ষার সুযোগ পেতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে এ ধরনের সচেতনমূলক আয়োজন তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন তারা।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে এক পথচারী নারীকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুই তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চৌমুহনী টু সোনাইমুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের বগাদিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার বারাহিপুর গ্রামের মিলনের ছেলে মো. শোয়েব (২২) ও শাহ আলমের ছেলে মো. ফাহিম (২৩)। তারা দুজন একই গ্রামের প্রতিবেশী ও বন্ধু ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে শোয়েব ও ফাহিম চৌমুহনীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। যাত্রা পথে মোটরসাইকেলটি চৌমুহনী টু সোনাইমুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের বগাদিয়া এলাকায় পৌঁছলে এক নারী পথচারী হঠাৎ রাস্তা অতিক্রম করার চেষ্টা করে। এ সময় মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে এক মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলে মারা যায়। আরেকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এক পথচারী নারীকে বাঁচাতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে নাজিম উদ্দিন (১৩) নামের এক মাদরাসাছাত্রের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমের দ্বিতীয় তলার শয়নকক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নাজিম উদ্দিন সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের জাহানাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। সে ২৬ পারা হেফজ শেষ করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহপাঠী আবু সাইদকে (১৬) ছুরিসহ আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমের দ্বিতীয় তলার শয়নকক্ষে একসঙ্গে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। রাত ৩টার দিকে চিৎকার শুনে ওই কক্ষের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আবু রায়হান লাইট জ্বালিয়ে দেখেন নাজিম উদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করেছে সহপাঠী আবু সাইদ। বিষয়টি মাদরাসার প্রধান মাওলানা মাসুম বিল্লাহকে জানালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত আবু সাইদকে আটক করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে মাদরাসার প্রধান মাওলানা মাসুম বিল্লাহকে ফোন দিলে তিনি পেরেশানির মধ্যে আছেন বলে লাইন কেটে দেন। তারপর একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। স্থানীয় বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বলেন, মাদরাসাটির অনেক সুনাম রয়েছে। কিন্তু এমন মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। শুনেছি ক্রিকেট খেলা নিয়ে ওই ছেলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। সেই ঘটনার জের ধরে ঘুমন্ত অবস্থায় জবাই করে হত্যা করেছে। আমরা চাই এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ঘটনাস্থল থেকে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনির হোসেন বলেন, আটক আবু সাইদ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। নিহত নাজিম উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাটি ব্যবসায়ীকে ইট দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে সোনাইমুড়ি পূর্বপাড়া আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কাশেম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির দুধ মিয়ার ছেলে। তিনি মাটি ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সোনাইমুড়ি গ্রামের হাবিবুল্লাহ ডাক্তার বাড়ির মাইনউদ্দিন, মাইনউদ্দিনের ছেলে রাকিব ও জমাদার বাড়ির আবুল খায়ের মাস্টার। স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা জানান, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির মসজিদের সামনে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে জমাদার বাড়ির খায়ের মাস্টারের সঙ্গে একই গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ির ফরহাদের কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সালিশ বসার কথা ছিল। বৈঠক না হওয়ায় পুনরায় খেলতে যায় ফরহাদ। পরে রাহাত, সজীব ও জসিমের সঙ্গে ফরহাদের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে কিলঘুষি মারতে থাকে তারা। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কাশেম ও তার ছেলে সোহাগ বাধা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আবুল খায়ের মাস্টারসহ ৩০-৪০ জন কাশেম ও সোহাগের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। খায়েরের ছেলে আনোয়ার, ফারুক, জাহাঙ্গীরসহ ৮-১০ জন ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে কাশেমের মৃত্যু নিশ্চিত করে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে কাশেমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া থানায় কাশেমের ছেলে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় সাইমুন (২০) নামের এক কলেজছাত্র প্রেমিকার উপস্থিতিতে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের মানিক্যনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। তবে আত্মহত্যার তাৎক্ষণিক কোনো কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে প্রেমিকার সঙ্গে মনোমালিন্য থেকে সাইমুন আত্মহত্যা করেন। নিহত সাইমুন সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের মানিক্যনগর গ্রামের আমজাদ বেপারী বাড়ির প্রবাসী মিজানের ছেলে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্র সাইমুনের বাড়িতে সকালে তার প্রেমিকা ও তার আরেক বান্ধবী কিছু নাস্তা নিয়ে বেড়াতে আসেন। মেয়ে দুটির সঙ্গে কথা বলার মাঝে হঠাৎ সাইমুন নিজ বসতঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস দেয়। বিষয়টি তার বড় চাচি জুবাইদা খাতুন টের পেয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে ডেকে গলার রশি কেটে উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইমুনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বড় চাচি জুবাইদা খাতুন বলেন, সাইমুনকে মেয়ে দুটির সঙ্গে নাস্তা করতে দেখে আমি রান্না করতে যাই। পরে আমার ছোট ছেলের চিৎকার শুনে আমি সেখানে গিয়ে সাইমুনকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাই। মেয়ে দুটি তখন সাইমুনের গলার দড়ি খোলার চেষ্টা করছিল। মেয়ে দুটি ফাঁস দেওয়ার সময় বাইরে ছিল বলে দাবি করেন তিনি। এই ঘটনায় এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে মেয়ে দুটিকে আটক করে সোনাইমুড়ি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরবর্তীতে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ায় পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দেয়। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহতের পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে